শরৎ সমিতি

Sarat samity

শরৎচন্দ্র সংগ্রহশালা

শরৎ সমিতির ব্যবস্থাপনায় ও তত্ত্বাবধানে শরৎচন্দ্রের নিজের বাড়িতে (২৪ অশ্বিনী দত্ত রোড, কলকাতা ৭০০০২৯) স্মৃতিরক্ষামূলক একটি শরৎ সংগ্রহশালা আছে।  শরৎচন্দ্র ১৯৩৪ সাল থেকে আমৃত্যু অর্থাৎ ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত এই বাড়িতে থাকতেন। প্রদর্শনীর জন্য এই সংগ্রহশালায় তাঁর জিনিসপত্র ও প্রিয় গ্রন্থাবলি সংরক্ষিত আছে। তাছাড়া অন্যান্য দ্রষ্টব্য বস্তুও এই সংগ্রহশালার বড় আকর্ষণ। ২০১২ সালে এটিকে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।

সংগ্রহশালার বই

শরৎ সংগ্রহশালায় রক্ষিত বইগুলি চারভাগে ভাগ করা যেতে পারে –

১) শরৎচন্দ্রের সংগৃহীত ও স্বাক্ষরিত বই

২) শরৎচন্দ্রের নিজের লেখা বই

৩) বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত  শরৎচন্দ্রের ব‌ই

8) শরৎচন্দ্রের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা গ্রন্থ

*শরৎচন্দ্রের সংগৃহীত ও স্বাক্ষরিত বই

শরৎচন্দ্রের স্বাক্ষরিত ও সংগৃহীত যে বারোটি বই আছে তার মধ্যে আটটির লেখক টলস্টয়। টলস্টয় তার অন্যতম প্রিয় লেখক সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। তবে রুশ লেখকের মধ্যে দস্তয়েভস্কি ও গোর্কির লেখনীর দ্বারাও তিনি অনুপ্রাণিত হন।

শরৎচন্দ্রের সংগৃহীত টলস্টয়ের লেখা ও টলস্টয়ের উপরে লেখা  বইয়ের নাম—

(১) আন্না কারেনিনা।

(২) চাইল্ডহুড, বয়হুড, ইয়ুথ।

(৩) মাই কনফেসন, মাই রিলিজিয়ন।

(৪) মাস্টার এন্ড ম্যান, ক্রয়েটজার সোনাটা।

(৫) লাইফ অব কাউন্ট টলস্টয়।

(৬) এ রাশিয়ান প্রোপ্রাইটার, ডেথ অব আইভান ইলচি এণ্ড আদার স্টোরিস।

(৭) রিসারেকশন।

(৮) কসাক, সেভাস্তোপল, দি ইনভেডারস এন্ড আদার স্টোরিস।

       জোলা বা ডিকেন্সের বই এই সংগ্রহশালায় নেই তবু  তাঁরা শরৎচন্দ্রের  প্রিয় লেখক ছিলেন।

       চরিত্রহীন উপন্যাস আলোচনায় তিনি টলস্টয়ের উদাহরণ দিয়েছেন। প্রমথনাথ ভট্টাচার্যকে রেঙ্গুন থেকে একটি চিঠিতে লেখেন: ‘এ একটা সায়েন্টিফিক সাইকো এন্ড এথিক্যাল নভেল আর কেউ এরকম করিয়া বাঙলায় লিখিয়াছে বলিয়া জানি না এতেই ভয় পেলে ভাই। কাউন্ট টলস্টয়ের রিসারেকশন পড়েছ কি? হিজ বেস্ট বুক। একটা সাধারণ বেশ্যাকে লইয়া। তবে আমাদের দেশে এখনও অতটা আর্ট বুঝিবার সময় হয় নাই, সে কথা সত্য।’
[রিফ্লেক্ট পাবলিকেশন :  শরৎ সমগ্র, ৫ম খণ্ড, পৃঃ ৬৫২]

       শরৎচন্দ্রের প্রিয় ডিকেন্সের বইগুলি এখানে সংগ্রহশালায় নেই। বলাইচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় শরৎ স্মৃতি প্রবন্ধে শরৎচন্দ্রকে উদ্ধৃত করেছেন –
‘ডিকেন্স আমার বড়ো আদরের জিনিস রে। কতোবার সে পড়িলাম তবু যতবার পড়ি ততবার নতুন বলিয়াই মনে হয়।’ ডিকেন্সের বইগুলির ভালো লাগা লাইনগুলি লাল পেন্সিলে তিনি দাগ দিয়ে রাখতেন আর সেগুলো তিনি বাংলায় তর্জমা করতেন।
[শরৎ স্মৃতি, বিশ্বনাথ দে সম্পাদিত, সাহিত্যম, কলকাতা ১২, পৃঃ ১৬৫]

       সামতাবেড়ে তাঁর ব্যক্তিগত পাঠাগারে চোখে পড়ে ডিকেন্স আর টলস্টয়ের সমস্ত রচনা সংগ্রহ। তাছাড়া Women in all ages and in all circumstances সিরিজের সাতখানি বইয়ের সংগ্রহ যেগুলি তাঁর ‘নারীর মূল্য’ গ্রন্থের প্রেরণা। ব্যক্তিগত গ্রন্থাগারে বইয়ের তালিকা মিহির আচার্যের নিম্নলিখিত সম্পাদিত বই থেকে পাওয়া যাবে।
[সূত্র : মিহির আচার্য সম্পাদিত শতবর্ষের আলোকে শরৎচন্দ্র, পৃঃ ৯৮]

*শরৎচন্দ্রের নিজের লেখা বই

শরৎচন্দ্রের নিজের লেখা সমস্ত বই এই সংগ্রহশালায় রাখা হয়েছে। শরৎ সমিতি প্রকাশিত শরৎ রচনাবলী, বিভিন্ন উপন্যাস ও গল্পের বই এখানে স্থান পেয়েছে। শ্রীকান্ত (চারটি খণ্ড), কাশীনাথ, দেবদাস, পথের দাবী, পল্লীসমাজ, পরিণীতা, চরিত্রহীন ইত্যাদি বই এখানে রক্ষিত আছে। নানা পরিচিত সুধীজনকে  লেখা চিঠিতে তাঁর নিজের লেখা বই সম্পর্কে  মত ও মন্তব্য নীচে দেওয়া হলো ।

কাশীনাথ : আমার কাশীনাথটা অতি ছেলেবেলাকার লেখা। যে সময় ওটা তোমারও ভাল লাগত (মনে আছে বোধহয় পাথুরে ঘাটায়, আমারও ভালো লেগেছিল, লিখেওছিলাম। আজ তুমি বড়ো হয়েছ, আমিও। তোমারও ভালো লাগেনি আমারও অতি বিশ্রী লেগেছে।
[প্রমথনাথ ভট্টাচার্যকে লেখা চিঠি, রেঙ্গুন ৪ এপ্রিল ১৯১৩। শরৎ সমগ্র, ৫ম খণ্ড, রিফ্লেক্ট: পৃঃ ৬৪]

পথের দাবী: শুনতে পাই এটা সকলের ভালো লেগেছে। যদিও একটু শক্ত গোছের এবং একটু মন দিয়ে পড়া দরকার।
[প্রমথনাথ ভট্টাচার্যকে লেখা, রেঙ্গুন ১৭ এপ্রিল ১৯১৩, শরৎ সমগ্র ৫ম খণ্ড, রিফ্লেক্ট]

রামের সুমতি : পরিশ্রমের হিসাবে, রুচির হিসাবে পথের দাবীর কাছে রামের সুমতির স্থান নীচে। আমি একটা গৃহস্থ চিত্র লিখিব স্থির করিয়া রামের সুমতি-র মতো একটা নমুনা লিখি। এই রকম হিন্দু গৃহস্থ পরিবারে যত রকমের সম্বন্ধ আছে সব রকম সম্বন্ধ অবলম্বন করিয়া এক-একটা গল্প লিখিয়া এই বইখানা সম্পূর্ণ করিব। এটা শুধু মেয়েদের জন্যই হইবে।
[প্রমথনাথ ভট্টাচার্যকে লেখা, ১২ মে (ডাকমোহর) ১৯১৩, শরৎ সমগ্র, ৫ম খণ্ড, রিফ্লেক্ট]

দেবদাস : দেবদাস ভালো নয়, সুরেনরা আমার সব লেখারই বড় তারিফ করে, তাদের ভালো লাগার মূল্য আমার লেখা সম্বন্ধে নাই। ওটা ছাপা হয় তাও আমার ইচ্ছা নয়।
[প্রমথনাথ ভট্টাচার্যকে লেখা, ৩১ মে ১৯১৩]

দেবদাস নিও না, নেবার চেষ্টাও করো না। এই বইটা একেবারে মাতাল হইয়া বোতল খাইয়া লেখা। ওটার জন্য আমি নিজেও লজ্জিত, ওটা ইমমরাল।
[চিঠি : শরৎচন্দ্র, ৫ম খণ্ড, রিফ্লেক্ট, পৃঃ ৬৬৯]

চন্দ্রনাথ: চন্দ্রনাথ তোমার ভাল লাগবে তা আশ্চর্যের বিষয় নাই, কেননা আমার ভাল লাগেনি। একে তো ছেলেবেলার লেখার অপূর্ণতা বেশী তাতেমাঝে মাঝে উচ্ছ্বাস রয়ে গেছে। এই উচ্ছ্বাস বস্তুকে আমার ভীষণ ভয়।… তবে ভাষাটা খুব নরম, বোধকরি আশ্চর্য সরল এবং ডিরেক্ট। এটা অস্বীকার করা যায় না।
[প্রমথনাথ ভট্টাচার্যকে লেখা , রেঙ্গুন ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯২৩, শরৎচন্দ্র সমগ্র, ৫ম খণ্ড, রিফ্লেক্ট, পৃঃ ৬৬৭]

চরিত্রহীন: যারা ইংরাজী, ফ্রেঞ্চ, কিংবা জার্মান নভেল পড়িয়াছে তাহারা অবশ্যই বুঝিবে ইহা সত্যই ইমমরাল কিনা। … যাই হোক আমি এখনও স্বীকার করি না চরিত্রহীনে এক বর্ণও ইমমরালটি আছে।
[চিঠি, পৃঃ ৬৬৯, শরৎ সমগ্র, ৫ম খণ্ড, রিফ্লেক্ট]

পণ্ডিতমশাই : আমার শরীর আজকাল খুব খারাপ আর  লিখতেও ইচ্ছে করে না আর বোধহয় হয় লিখলে আর  ভালোও হয় না। পণ্ডিতমশাই এই অবস্থায় লেখা বোধকরি ভালো হয়নি।
[ভারতবর্ষের সত্ত্বাধিকারী হরিদাস চট্টোপাধ্যায়কে লেখা]

শ্রীকান্ত : শ্রীকান্তের ভ্রমণ কাহিনী যে সত্যই ভারতবর্ষে ছাপিবার যোগ্য আমি মনে করি নাই, এখনও করি না। … আমার নামটা যেন কোনমতেই প্রকাশ না পায়। অবশ্য শ্রীকান্তর আত্মকাহিনীর সঙ্গে কতকটা সম্বন্ধও থাকিবেই, তাছাড়া ওটা ভ্রমণই বটে তবে আমি নেই। অমুকের সঙ্গে শেকহ্যাণ্ড করিলাম অমুকের গা ঘেঁষিয়া বসিয়াছি এসব নেই।
[ হরিদাস চট্টোপাধ্যায়কে লেখা চিঠি, রেঙ্গুন]

 

*শরৎচন্দ্রের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা গ্রন্থ

   বই বহু খ্যাতিমান লেখক ও সমালোচকরা শরৎচন্দ্রের ওপর বিভিন্ন সময়ে নানা আলোচনা করেছেন। কোনো বই গবেষণামূলক বা তথ্য নির্ভর, কোনো বই স্মৃতিকথামূলক। শরৎ সমিতি পরিচালিত এই ভবনের গ্রন্থাগারটিতে অধিকাংশ বই সংরক্ষিত আছে। কয়েকটির নাম  নীচে উল্লেখ করা হলো। এগুলি অন্য ব‌ইয়ের সূত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।

১) শরৎ সন্নিধ্যে:  কালিদাস রায়
২) শরৎচন্দ্রের জীবন রহস্য : সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়
৩) শরৎচন্দ্রের বৈঠকী গল্প: গোপালচন্দ্র রায়
৪) শরৎচন্দ্রের জীবন ও সাহিত্য:  সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত
৫) শতবর্ষের আলোকে শরৎচন্দ্র : মিহির আচার্য সম্পাদিত
৬) শরৎসাহিত্যে সমাজ চেতনা :  সরোজমোহন মিত্র
৭) শরৎ স্মৃতি: বিশ্বনাথ দে সম্পাদিত

*বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত  শরৎচন্দ্রের ব‌ই

উর্দু, তামিল, ওড়িয়া, হিন্দি ইত্যাদি ভারতবর্ষের প্রায় সব ভাষায় শরৎচন্দ্রের লেখা ব‌ই অনুবাদ করা হয়েছে । এই সংগ্রহশালায় সব বই রাখা সম্ভব হয়নি তবে লেখকদের ও বইগুলির  একটি তালিকা এখানে আছে।  এ বিষয়ে জিজ্ঞাসু পাঠকেরা গ্রন্থাগারে এসে যোগাযোগ করলে তাঁদের যথাসম্ভব সাহায্য করা হয়।
     আজ শরৎচন্দ্র নেই তবু এই সংগ্রহশালা তাঁর স্মৃতি বহন করে চলেছে। এখানে এলে মনে পড়ে নজরুল ইসলামের সেই পংক্তিগুলি –

‘পৃথিবীর চাঁদ অস্ত গিয়াছে আলো তার স্মৃতি ভবনে
তেজপ্রদীপ্ত তেমনি জ্বলিছে নিভিবে না তাহা পবনে
ঝরিবে তাহার রসধারা চির অমরাবতীর শ্রীলোকে।’

সংগ্রহশালায় বইগুলি ছাড়াও অন্যান্য জিনিসপত্র আছে। সেগুলি  হলো –

১) শরৎচন্দ্রের লিখিত বইয়ের পাণ্ডুলিপি
২) প্রদত্ত উপাধি, অভিনন্দন ও উপহার
৩) পোশাক পরিচ্ছদ
৪) অন্যান্য ব্যবহৃত দ্রব্য সম্ভার
৫) ক্যামেরা বন্দি কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফোটো
৬) প্রসিদ্ধ চিত্রকরের আঁকা শরৎচন্দ্রের জীবনের চিত্রমালা

বইয়ের পাণ্ডুলিপি – পথের দাবী

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্রী চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়ের সৌজন্যে পথের দাবী-র পাণ্ডুলিপি এখানে আমরা সংগ্রহ করতে পেরেছি। বিপ্লব ও স্বাধীনতার বাণী বহনকারী এই ব‌ইটি ১৯২৬-এর ৩১ অগস্ট প্রকাশিত হয়। বইটিকে রাজদ্রোহমূলক সাব্যস্ত করে ইংরেজ সরকার এটির প্রকাশ ও প্রসার বন্ধ করে দেয় ১৯২৭ সালে। শরৎচন্দ্রের মৃত্যুর পর ইংরেজ আমলের বাংলা সরকার বইটির প্রকাশন ও বিতরণের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। নিষেধ তুলে নেবার পর দ্বিতীয় সংস্করণের প্রকাশ বাংলা ১৩৪৬ সালের বৈশাখ মাসে।
[সূত্র : শিবপ্রসাদ সমাদ্দার: শরৎ শতম, অনিমা প্রকাশনী, পৃঃ ৯৮]

পথের দাবী যখন বঙ্গবাসীতে ধারবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছিল তখন প্রকাশক সংস্থা এম.সি. সরকার এন্ড সন্স-এর কর্ণধার সুধীর সরকার বঙ্গবাণীতে প্রকাশিত সমগ্র রচনাটিকে পুস্তককারে প্রকাশে অসম্মত হন। শরৎচন্দ্র ভারতবর্ষ-এর সত্ত্বাধিকারী হরিদাস চট্টোপাধ্যায়কে পথের দাবীকে সম্পূর্ণ উপন্যাস হিসাবে প্রকাশের জন্য অনুরোধ করেন। তিনিও অংশবিশেষ বর্জন না করে এই উপন্যাস ছাপতে অস্বীকার করেন। নিরুপায় শরৎচন্দ্র রমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে একই আবেদন করেন। তাঁরা রাজী হন। তবে কোনো প্রেস এই বইটি ছাপতে চায় না। পরে কটন প্রেসে ছেপে সম্পূর্ণ উপন্যাসটি বই হিসাবে প্রকাশ পায়।
[ সূত্র: অজিতকুমার ঘোষ: শরৎচন্দ্রের জীবনী ও সাহিত্যবিচার, পৃঃ ৩৪৫-৩৪৬]

প্রদত্ত উপাধি, অভিনন্দন ও উপহার

১৯৬৩ সালের ২৯শে জুলাই শরৎচন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানজনক ডি.লিট উপাধি লাভ করেন। সেইসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সলার ছিলেন ডঃ এ. এফ. রহমান। শরৎচন্দ্রের সঙ্গে সেদিনের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত হন স্যার যদুনাথ সরকার ও আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়। এসম্পর্কে ১৩৪৩ বঙ্গাব্দের ভাদ্রমাসের ভারতবর্ষ পত্রিকার একটি মন্তব্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শরৎচন্দ্রকে সম্মানিত করলেন বটে কিন্তু তাঁহার কর্মক্ষেত্র কলিকাতাস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় এখনও এ বিষয়ে তাঁহাদের কর্তব্য পালন করেন নাই। ইহা বাস্তবিকই পরিতাপের বিষয়।’
[সূত্র : ইন্দ্রমিত্রের শরৎকথামালা,  পৃঃ ৫৩ এবং অজিতকুমার ঘোষের শরৎচন্দ্রের জীবনী ও সাহিত্য, পৃঃ  ৪৩৭]

বিশেষ উল্লেখযোগ্য  শরৎচন্দ্রের জন্মদিনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পাঠানো শুভেচ্ছাবার্তা। নানা সংস্থার প্রদত্ত অভিনন্দনবার্তা‌ও এই সংগ্রহশালায় রক্ষিত আছে। কয়েকটি সংস্থার নাম দেওয়া হল :

১) কোন্নগরের অধিবাসীবৃন্দ
২) শিলংবাসী বাঙালিরা  (আশ্বিন ১৩৪৩)
৩) চিত্তরঞ্জন ক্লাবের যুবকবৃন্দ (জানুয়ারি ১৯৩৫)
৪) যশোহরের অধিবাসীবৃন্দ (২০ জানুয়ারি ১৯৩৫)। 
      ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের ছাত্রছাত্রীরা তাঁকে শঙ্খ
      উপহার দিয়েছিলেন। সেই শঙ্খ এখানে রক্ষিত আছে।

শরৎচন্দ্রের ব্যবহৃত দ্রব্য সম্ভার

শরৎচন্দ্র ব্যবহৃত যেসব দ্রব্য সংগ্রহালয়ে আছে সেগুলি হলো কাগজ ও কলম, সিগারেট কেস, চশমা ও রোদ-চশমা, ব্যাঙ্কের পাশব‌ই এবং পাসপোর্ট।

চিত্রমালা

সংগ্রহশালায় শরৎচন্দ্রকে নিয়ে শিল্পীদের আঁকা এবং চিত্রগ্রাহকের তোলা বহু মূল্যবান ছবিও আছে।
(সংগ্রহশালা সংক্রান্ত তথ্যের সংকলক: অসীম সেন)