শরৎ সমিতি

Sarat samity

শরৎ পুরস্কার

শরৎ পুরস্কার, শরৎ অনুবাদ পুরস্কার এবং শরৎচর্চা ও গবেষণা পুরস্কার নিয়মাবলি

 

শরৎচন্দ্র স্মরণে প্রদত্ত পুরস্কার

 

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৭৬-১৯৩৮) বাংলা ভাষার এক অমর কথাসাহিত্যিক।সর্বভারতীয় ক্ষেত্রেও তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয়। তাঁর জন্মের শতবর্ষে শরৎ সমিতি তাঁর নামাঙ্কিত একটি পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়। সেটি শরৎ পুরস্কার নামে প্রচলিত হয়। ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের গ্রন্থ ভাষান্তরের জন্য অনুবাদ পুরস্কারের সূচনা করা হয়। তার পাঁচ বছর পরে ২০০০ খ্রিস্টাব্দে শরৎচন্দ্রের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে চিন্তামূলক কাজের জন্য শরৎচর্চা ও গবেষণা পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। পুরস্কার তিনটি ভারতীয় সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতে বিশেষ সমাদর লাভ করেছে কারণ এগুলির সঙ্গে শরৎচন্দ্রের নাম বিজড়িত।

 

শরৎ পুরস্কারের নিয়মাবলি

 

১। বাংলা ভাষায় রচিত সমগ্র সাহিত্যসৃষ্টির জন্য শরৎ পুরস্কার প্রদান করা হবে।
জীবিত বা বিগত তিন বৎসরের মধ্যে প্রয়াত ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার,
কবি, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক এবং সাহিত্য সমালোচকদের নাম পুরস্কারের জন্য
বিবেচিত হবে। পুরস্কারের সম্মান দক্ষিণা তিরিশ হাজার টাকা। সেই সঙ্গে
একটি রৌপ্য পদক এবং একটি মানপত্র প্রদান করা হবে।

২। অনুবাদ পুরস্কারের ক্ষেত্রে অনুবাদটি সম্পূর্ণ হতে হবে। শরৎচন্দ্রের মূল
ব‌ইয়ের কোনো অংশ বর্জিত হলে বা নতুন কিছু সংযোজিত হলে তা গ্রহণীয়
হবে না । সেই সব অনুবাদকের নাম‌ই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে যাঁরা
জীবিত আছেন বা বিগত তিন বৎসরের মধ্যে প্রয়াত হয়েছেন। পুরস্কারের
সম্মান দক্ষিণা কুড়ি হাজার টাকা। সেই সঙ্গে একটি রৌপ্য পদক ও একটি
মানপত্র প্রদান করা হবে।

৩। চর্চা ও গবেষণা পুরস্কারটি শরৎচন্দ্রের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে মননশীল গ্রন্থের
লেখককে দেওয়া হবে। সাহিত্য ছাড়াও নাটক, চলচ্চিত্র, শিল্পকলা ইত্যাদি
শিল্পরূপে কেউ যদি শরৎচন্দ্রের জীবন ও কথাসাহিত্য নিয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ
করেন, তাঁর নাম‌ও এই পুরস্কারটির জন্য বিবেচিত হবে। জীবিত বা বিগত
তিন বৎসরের মধ্যে প্রয়াত ব্যক্তিদের নাম‌ই শুধু আলোচিত হবে। পুরস্কারের
সম্মানদক্ষিণা কুড়ি হাজার টাকা। সেই সঙ্গে একটি রৌপ্য পদক ও একটি
মানপত্র প্রদান করা হবে।

৪। শরৎ সমিতির কার্যনির্বাহক পরিষদ প্রত্যেক বৎসর জ্যৈষ্ঠ মাসের মধ্যে পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তির একটি তালিকা প্রস্তুত করবে এবং শরৎ সমিতির সভাপতি সেই তালিকা থেকে তিনটি নাম বিচারকমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে নির্বাচন করবেন। ওই তিনজন ছাড়াও শরৎ সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক বিচারকমণ্ডলীর সদস্য থাকবেন। বিচারকমণ্ডলীর সভায় শরৎ সমিতির সভাপতি সভাপতিত্ব করবেন। বিচারকমণ্ডলীর সিদ্ধান্ত কার্যনির্বাহক সমিতিকে অবহিত করা হবে।

৫। শরৎচন্দ্রের জন্মদিন ৩১ ভাদ্র বা তার কাছাকাছি কোনো তারিখে পুরস্কার
তিনটি প্রদান করা হবে।

৬। পুরস্কার বিষয়ে শরৎ সমিতির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।

শরৎ পুরস্কার, শরৎ অনুবাদ পুরস্কার
এবং শরৎচর্চা ও গবেষণা পুরস্কার প্রাপকদের নাম
১৯৭৬ … শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় (মরণোত্তর)
১৯৭৭ … গোপাল হালদার
১৯৭৮ … বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়
১৯৭৯ … চারুচন্দ্র চক্রবর্তী (জরাসন্ধ)
১৯৮০ … অমিয় চক্রবর্তী
১৯৮১ … প্রেমেন্দ্র মিত্র
১৯৮২ … প্রমথনাথ বিশী
১৯৮৩ … বিমল মিত্র
১৯৮৪ … সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত
১৯৮৫ … মণীন্দ্রলাল বসু
১৯৮৬ … অন্নদাশংকর রায়
১৯৮৭ … মনোজ বসু
১৯৮৮ … উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
১৯৮৯ … আশাপূর্ণা দেবী
১৯৯০ … লীলা মজুমদার
১৯৯১ … হীরেন্দ্রনাথ দত্ত

১৯৯২ … গজেন্দ্রকুমার মিত্র
১৯৯৩ ‍… মহাশ্বেতা দেবী
১৯৯৪ … দেব নারায়ণ গুপ্ত
১৯৯৫ ‌‌ রমাপদ চৌধুরী
১৯৯৬ … নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
১৯৯৭ … মণিশংকর মুখোপাধ্যায়
১৯৯৮ … অরুণ মিত্র
১৯৯৯ … সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ
২০০০ … প্রতিভা বসু
২০০১ … শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়
২০০২ … সুভাষ মুখোপাধ্যায়
২০০৩ … অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় (মরণোত্তর)
২০০৪ … শঙ্খ ঘোষ
২০০৫ … অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়
২০০৬ … প্রফুল্ল রায়
২০০৭ … নবনীতা দেবসেন
২০০৮ … রবীন্দ্রকুমার দাশগুপ্ত
২০০৯ … নিমাই ভট্টাচার্য
২০১০ … সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
২০১১ … শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২০১২ … সুব্রত মুখোপাধ্যায়
২০১৩ ‍… সুচিত্রা ভট্টাচার্য
২০১৪ … দেবেশ রায়
২০১৫ … বাণী বসু
২০১৬ … মনোজ মিত্র
২০১৭ … জয় গোস্বামী
২০১৮ … অমর মিত্র
২০১৯ … অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত